1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে রাঙ্গামাটি পৌর শহরে পাচ হাজারে অধিক পরিবার

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২০
  • ২২০ Time View

চৌধুরী হারুনুর রশীদ,রাঙ্গামাটি:বর্ষা মৌসুম যেন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির মানুষের কাছে এক আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করতে হয়। প্রতিবছরই এই সময়টা এলেই পাহাড়ধস আতঙ্কে থাকেন জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করে ৫ হাজার পরিবার। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পাহাড়ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে রাঙ্গামাটিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড। তবে ঝুঁকিতে বসবা করলছেন, প্রশাসনের নিষেধজ্ঞা থাকার পরও তারা বসতি গড়ে তুলেছেন।

ভেদভেদী এলাকার নাছির জানায় , ঝুঁকি জেনেও আমাদের নিজের ঘরেই থাকতে হচ্ছে। ২০১৭ সালের পর থেকে প্রতিবছর বর্ষার দিনে বৃষ্টি পড়লেই আতঙ্কে থাকি। কিন্তু আমাদের এই বসতভিটা ছাড়া বিকল্প বাসস্থান না থাকায় তাই বাধ্য হয়ে এখানেই থাকতে হচ্ছে। তাই এখন বৃষ্টির দিনে ভয় বুক বেঁধে থাকতে হচ্ছে।

রূপনগর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এলাকার মানুষ এখন বর্ষা মৌসুম এলে ভয়ে-আতঙ্কে থাকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই আমাদের সাবধান থাকতে বলা হচ্ছে। কিন্তু নিরুপায় হয়ে আমরা এই মৃত্যুকূপে পড়ে আছি। অন্যত্র সরে যাওয়ার মত অবস্থা থাকলে কেউই ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করার কথা না।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, কেবলমাত্র রাঙ্গামাটি শহরের ২৫টি স্থানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে পাঁচ হাজারের অধিক পরিবার। এই ৫ হাজার পরিবারের জনসংখ্যা কমপক্ষে চারজন করে হলেই মোট বিশ হাজার অধিক মানুষ পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে আছে শহর এলাকাতেই। সম্প্রতি রাঙ্গামাটি জেলা শহরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রূপনগর, শিমুলতলী, ভেদভেদী নতুন পাড়া, মনতলা, যুব উন্নয়ন এলাকায় সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। পাহাড়ে পাদদেশে বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া জেলা শহরে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র। চম্পক নগরসহ বিভিন্ন স্থানে ঝুকিপুর্ণ ব্রীক ওয়াল রয়েছে । যে কোন ঝুকিপুর্ণ ব্রীকওয়াল ওপর টিনের চালের পানি পড়ে ভয়াবহ প্রাণনাশের আশংকা করছেন এলাকাবাসী । সাবেক প্রশাসন ও মেয়র নিবার্হী প্রকৌশলী তদন্ত পুর্বক কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নোটিশ ইস্যু করলেও বর্তমান পৌরসভা এই বিষয়ে সঠিক কোন সিদ্ধান্ত দিচ্ছে না । ২০১৮ সালে চম্পক নগরে জেলা পরিবার পরিকল্পনা(ডিডি) অফিসের নর্বনির্মিত ওয়াল বৃষ্ট্রি পানিতে ধসে পড়ে । তারও আগে একই এলাকায় ডা.মহসিন ভাড়া বাসায় বর্ষার মৌসুমে ব্রীক ওয়াল ধসে পড়ে এক মহিলা ঘটনাস্থলে নিহত হয়।

রাঙ্গামাটির সাথে অন্য জেলাশহর যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে । ফলে তৎক্ষনিক কিছু অদক্ষ ঠিকাদার ও শ্রমিক দিয়ে সড়কের উভয় পার্শ্বে কচি কচি গাছের বল্লি দিয়ে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ । এখনো পুর্বেও সংস্কার করা সড়ক ,কালভার্ট ও বেইলী ব্রীজ দিয়ে চলছে পরিবহন । পরিকল্পিত টেকসই মজুদ কিছুই নিমার্ণ করেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ । রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে সাপছড়ি সড়কের ওপর পাহাড় ধসে পড়লে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে । প্রায় ২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি সেই সময়ে বেইলী ব্রীজ করে ।এবং মাটি সরিয়ে ইটা বসিয়ে সাময়িক যোগাযোগ স্থাপন করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ ।

রাঙ্গামাটি পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবি মোহন চাকমা বলেন, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙ্গামাটিতে একমেজরসহ চারজন সেনা সদস্য সড়ক যোগাযোগ চালু করতে গিয়ে মানিকছড়ি ঘটনাস্থলে নিহত হয় । এই ঘটনায় শহরে ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। তখন সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ও জানমালের ক্ষতি হয়েছে আমার এলাকাতেই। তবে বিগত ২০১৮-১৯ সালে এলাকার মানুষ সচেতন থাকায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। এবছরই আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি। জেলা প্রশাসনও পাহাড়ধস ঠেকাতে করণীয় নির্ধারিত কাজ করে যাচ্ছে। যাতে করে আমাদের নতুন করে আবার কোনো প্রাণহানি দেখতে না হয়। এবছর জেলা প্রশাসন ও পৌরসভাকে করোনার কারণে দুইদিক দেখতে হচ্ছে। তারপরও আমাদের কাউন্সিলরগণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় গিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করছেন। সর্বোপরি পাহাড়ধসে মৃত্যু ঠেকাতে আমরা সকলেই একযোগে কাজ করে যাচ্ছি।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে যে সকল কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে জেলা শহরের পাহাড়ধসের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আমরা সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। এছাড়া জনসাধারণকে সচেতন করতে ও আশ্রয়কেন্দ্রের নামসহ প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছে। যাতে করে তারা বিপদে পড়লে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারেন। করোনার এই মহামারীতে সময়ে রাঙ্গামাটিতে জেলা প্রশাসনকে পাহাড়ধস ও করোনার ঝুঁকি- দুই দিকই সামলাতে হচ্ছে। তারপরও আর বিগত বছরের অভিজ্ঞতা থেকেই আগামী প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছি। আমরা আশাবাদী, জনসাধারণ সচেতন থাকলে এবছর রাঙ্গামাটিতে কাউকে পাহাড়ধসে প্রাণ দিতে হবে না।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙ্গামাটিতে ভয়াবহ পাহাড়ধসের ঘটনায় ১২০ জনের প্রাণহাতি ঘটে; আহত হন দুই শতাধিক মানুষ। এসময় জেলাজুড়ে তা-বে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া জেলা শহরের সঙ্গে চট্টগ্রামের প্রধান সড়ক ও খাগড়াছড়ি সড়কের একটি বিশাল অংশ ধসে টানা ১৭ দিন সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে পার্বত্য রাঙ্গামাটি। এর পরের বছর ২০১৮ সালের ১২ জুন জেলার নানিয়ারচরে পাহাড়ধসের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালেও জেলার কাপ্তাইয়ে পাহাড়ধসে তিনজনের মৃত্যু হয়। স্মরণকালের বিভীষিকাময় অতীত থেকেই প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুম এলেই রাঙ্গামাটির মানুষের আতঙ্ক বিরাজ করে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..